Recents in Beach

ইন্ডাকশন মোটরের মূলনীতি





ইন্ডাকশন মটর:- ১৮৮৮ খৃস্টাব্দে নিকোলা টেসলা ইন্ডাকশন মোটর আবিষ্কার করেন। অল্টারনেটর বা সিনক্রোনাস মোটরের মতই ইন্ডাকশন মোটরের স্টেটরে তিন ফেজ ওয়াইন্ডিং করা থাকে। এ ওয়াইন্ডিং-এ সৃষ্ট পোল সব সময় জোড় হয়ে থাকে। যেমন- দুই পোল, চার পোল, ছয় পোল, আট পোল ইত্যাদি। বাহির হতে স্টেটর ওয়াইন্ডিং এ তিন ফেজ এ. সি সাপ্লাই দেয়া হলে কারেন্ট প্রবাহিত হয়। এ কারেন্টের জন্য মোটরের স্টেটরে একটি ঘুরন্ত চুম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়, যা সিনক্রোনাস স্পীডে ঘুরতে থাকে। এ ঘুরন্ত চুম্বক ক্ষেত্র মোটরের মধ্যস্থিত রোটর কন্ডাকটরকে কর্তন করে থাকে, ফলে ফ্যারাডের ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন নীতিতে রোটর কন্ডাকটরে ই. এম. এফ আবিষ্ট হয়। যেহেতু রোটর সার্কিট বদ্ধ অবস্থায় থাকে, সেহেতু আবিষ্ট তড়িৎ চাপের জন্য কারেন্ট প্রবাহিত হয় এবং রোটরে ঘুর্ণক টর্ক উৎপন্ন হয়, ফলে স্টেটরে চুম্বক বলরেখা যেদিকে ঘুরে রোটরও সেদিকে ঘুরতে আরম্ভ করে। ইন্ডাকশন নীতির উপর ভিত্তি করে এই মোটর ঘুরে একে ইন্ডাকশন মোটর বলে। এ জন্য এই মোটরের আরেক নাম এসিনক্রোনাস মোটর। 


ট্রান্সফরমারের সেকেন্ডারিতে যেমন কোন বৈদ্যুতিক সংযোগ ছাড়াই ভোল্টেজ আবিষ্ট হয়, ঠিক তেমনি ইন্ডাকশন মো্টরের রোটরেও ভোল্টেজ আবিষ্ট হয়।  এ জন্য একে রোটেটিং ট্রান্সফরমারও বলা হয়।


অপারেশনের মূলনীতি অনুযায়ী এসি মোটরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা---
         ১। সিনক্রোনাস মোটর
         ২। এসিনক্রোনাস মোটর বা ইন্ডাকশন মোটর
         ৩।  কম্যূটেটর মোটর

সিনক্রোনাস মোটর:- সিনক্রোনাস মোটর এমন একটি মোটর যা নো লোড হতে ফুল লোড পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট গতিবেগ অর্থাৎ সিনক্রোনাস স্পীডে  Ns = 120f / P  ঘুরে।  এ মোটরের গতিবেগ লোড পরিবর্তনের সংগে কোন প্রকার পরিবর্তন হয় না। এ মোটরের সরবরাহ লাইনের ফ্রিকুয়েন্সি এবং পোল সংখ্যার পরিবর্তনের সংগে গতির পরিবর্তন হয়। এটা তৈরির দিক দিয়ে হুবুহু অল্টারনেটরের ন্যায়। কারণ সিনক্রোনাস মোটরে দু‌‍’ ধরনের সাপ্লাই দেয়া হয়। এসি সাপ্লাই দেয়া হয় স্টেটরে এবং ডিসি সাপ্লাই দেয়া হয় রোটর একসাইটেশনের জন্য।

এসিক্রোনাস বা ইন্ডাকশন মোটর:- অধিকাংশ বৈদ্যুতিক মোটরে বৈদ্যুতিক পাওয়ার সরাসরি রোটরে স্থানান্তরিত না হয়ে তদপরিবর্তে রোটরে আবেশিত পাওয়ার গ্রহন করে। যেমন- যেভাবে একটি ট্রান্সফরমারের সেকেন্ডারি পাওয়ার গ্রহন করে। এ কারণে এই ধরনের মোটরকে ইন্ডাকশন মোটর বলে।

সিনক্রোনাস স্পীড:- মোটরের স্টেটরে রোটেটিং ম্যাগনেটিক ফিল্ডের গতিকে সিনক্রোনাস স্পীড বলে। একে সংক্ষেপে (Ns)দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
এ গতি সাপ্লাই ফ্রিকুয়েন্সি এর সাথে সমানুপাতিক এবং স্টেটর পোল সংখ্যার সাথে উল্টানুপাতিক। অর্থাৎ

                            Ns =120f / P

স্লিপ স্পীড বা রেভোলিউশন স্লিপ বা রোটেশনাল স্লিপ:- ইন্ডাকশন মোটরের রোটর স্পীড সব সময়ই স্টেটর স্পীডের চেয়ে অর্থাৎ সিনক্রোনাস স্পীডের চেয়ে কম থাকে। তাই সিনক্রোনাস স্পীডের চেয়ে রোটরের গতিবেগ যতটা কম থাকে তাকে মোটরের স্লিপ স্পীড বলে। অর্থাৎ

স্লীপ স্পীড, S = (Ns-Nr)

স্লিপ:- সিনক্রোনাস স্পীড ও সঠিক রোটরের স্পীডের পার্থক্যকে স্লিপ বলে।
স্লিপকে সাধারণত শতকরা হিসেবে প্রকাশ করা হয়, যা পারসেন্টেজ স্লিপ নামে পরিচিত। ইন্ডাকশন মোটরের এ স্লিপ সাধারণত ৪% হতে ৮% পর্যন্ত হয়।

ইন্ডাকশন মোটরের গতিবেগ, Nr = Ns(1-S) = 120f(1-S) / P r.p.m
দেখা যাচ্ছে যে ফ্রিকুয়েন্সি (f), পোল সংখ্যা (P)এবং স্লিপ (S)এর উপর মোটরের গতিবেগ নির্ভরশীল। এ গুলোর মধ্যে যে কোন একটি নিয়ন্ত্রন করে গতিবেগ নিয়ন্ত্রন করা যায়।







ইন্ডাকশন মোটর ওয়েন্ডিং

৩ ফেজ ইন্ডাকশন মোটর দুই  ভাবে ওয়েন্ডিং করা যায়। যথা—

১।  সিঙ্গেল লেয়ার ওয়েন্ডিং এবং
২। ডাবল লেয়ার ওয়েন্ডিং

কয়েল পিচ = স্লট / পোল
এবং কয়েল গ্রুপ = ফেজ  × পোল

মোটরের গতিবেগ, Ns = 120f(1-S) / φ  r.p.m
যদি ফ্রিকুয়েন্সি  50Hz এবং স্লিপ 4% হয়, তবে

২ পোলের ক্ষেত্রে মোটরের গতিবেগ হবে = ২৮৮০ r.p.m
৪ পোলের ক্ষেত্রে মোটরের গতিবেগ হবে = ১৪৪০ r.p.m
৬ পোলের ক্ষেত্রে মোটরের গতিবেগ হবে = ৯৬০  r.p.m


সিঙ্গেল লেয়ার ওয়েন্ডিং এর ক্ষেত্রে,
কয়েলের সংখ্যা = স্লট সংখ্যা / ২
ডাবল লেয়ার ওয়েন্ডিং এর ক্ষেত্রে,
কয়েলের সংখ্যা = স্লট সংখ্যা


Post a Comment

0 Comments