Recents in Beach

বৈদ্যুতিক আঘাত : প্রাথমিক চিকিৎসা





সতর্কতা:

Þ    নিজে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন নতুবা আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন।
Þ    বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পূর্বে কোন ক্রমেই রোগীর শরীর স্পর্শ করা যাবে না।
Þ    বৈদ্যুতিক আঘাত প্রাপ্ত রোগীর চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে অযথা রোগীকে টানা হেঁচড়া অথবা ভূল চিকিৎসা করা যাবে না।


বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ:

v     বৈদ্যুতিক আঘাত প্রাপ্ত রোগীকে প্রথমেই বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে ।  সেই জন্য মেইন সুইচ অফ করে দিন। এছাড়াও প্রয়োজনে সার্কিট ব্রেকার, ফিউজ, প্লাগ, সুইচ এসব বন্ধ করে দিন।
v     যদি কোন কারনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব না হয়, তাহলে শুকনো বিদ্যুৎ অপরিবাহী ( যেমন- কাঠের উপর, প্লাষ্টিক, রাবার, মাদুড়, শুকনো কাপড় ) পদার্থের উপর দাড়িয়ে তারপর শুকনো লাঠি, শুকনো বাঁশ, শুকনো কাঠ অথবা অপরিবাহী পদার্থ ভালভাবে কয়েকভাজ করে আহত ব্যক্তির জামা কাপড় ধরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।

বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর :

ü      আহত ব্যক্তিকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে আসুন এবং শুকনো ও সমতল জায়গায় রাখুন।
ü      যদি ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয় তাহলে দ্রুত স্থানটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে ঢেকে রাখুন অথবা উঁচু করে রাখুন।  অযথা টানা হেঁচড়া থেকে বিরত থাকুন।
ü      আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান আছে কিনা লক্ষ্য করুন।
ü      আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস, বুকের উঠা নামা, নাড়ী স্পন্দন লক্ষ্য করুন।
ü      শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হলে ডান অথবা বাম কাত করে শুইয়ে রাখুন এবং নি:শ্বাসের রাস্তা পরিষ্কার কিনা লক্ষ্য রাখুন।
ü      আহত ব্যক্তিকে শুকনো কম্বল অথবা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখুন।
ü      যদি রোগীর শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক না হয় তাহলে কৃত্রিমভাবে শ্বাস প্রশ্বাস চালু রাখতে হবে।  এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে:-

প্রথম পদ্ধতি:

v     আহত ব্যক্তির সামনের দিকের অংশ যদি ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।  তাহলে রোগীকে পিঠ উপরের দিকে দিয়ে শুয়াতে হবে এবং হাত দুটো সোজা করে সামনের দিকে নিতে হবে।  তারপর রোগীর উপর হাঁটুগেড়ে বসতে হবে এবং রোগীর পিঠের উপর সর্বনিম্ন পাঁজরের কাছে উভয় হাত এমনভাবে রাখতে হবে যেন আঙ্গুলগুলি দু'পাশে ছড়িয়ে থাকে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলী দুটি মেরুদন্ডের সমান্তরালে প্রায় পরস্পরকে  ছুঁয়ে থাকে।  এখন সামনের দিকে বুকে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে প্রায় ৩ সেকেন্ড চাপ দিয়ে থাকতে হবে। 
            অত:পর ২ সেকেন্ড ধরে আস্তে আস্তে সরিয়ে নিতে হবে।  এই প্রক্রিয়া প্রতি মিনেটে ১২ থেকে ১৫ বার করতে          
            হবে।  এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত যত্নের সাথে করতে হবে এবং লক্ষ্য রাখা উচিত যেন রোগীর শরীর উষ্ণ থাকে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি:

v     যদি রোগীর বুকের বা সামনের অংশ পুড়ে যায় তাহলে রোগীকে পিঠ নিচের দিকে দিয়ে শোয়াতে হবে এবং কাঁধের নিচে বালিশ দিতে হবে।  রোগীর হাতের কনুইয়ের ঠিক নিচে ধরে তার হাত তার মাথার উপর টানতে হবে যতক্ষন না আনুভূমিক হয়। ওই অবস্থায় হাতগুলো প্রায় ২ সেকেন্ড রাখতে হবে ।  অত: পর রোগীর হাত দুটি পার্শ্বে নিয়ে হাঁটুর উপর বসে তার হাত দুটি সংকুচিত করতে হবে।  এই অবস্থায় ২ সেকেন্ড রেখে প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

তৃতীয় পদ্ধতি:

v     যদি শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তবে হাতের বুড়ো আঙ্গুলকে আহত ব্যক্তির মুখের মধ্য ঢুকিয়ে মাথা পিছন দিকে বাকিয়ে চোয়াল উচু করে নাসারন্ধ দুটি ডানহাতে চেপে ধরে বুক ভর্তি শ্বাস নিয়ে আহত ব্যক্তির মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে সবেগে হাওয়া দিতে হবে।  এতে বুকের প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে এবং বুক উঁচু হয়ে যাবে।  মুখ ছেড়ে দিলে হাওয়া আস্তে আস্তে বের হয়ে আসবে।  এই প্রক্রিয়া ৪ থেকে ৫ সেকেন্ডে একবার করে করতে হয়।  মুখ সরিয়ে নিয়ে লক্ষ্য করুন রোগীর বুক উঁচু নিচু হচ্ছে কিনা।  এইকাজ যিনি করবেন তার কোন দুরারোগ্য সংক্রামক ব্যাধি না থাকাই বাঞ্চনীয়।  হৃদ স্পন্দন চলতে থাকলে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়া চালানো যাবে।  হৃদপিন্ড থেকে মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রে রক্ত চলাচল ঠিক মত না হলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই  রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে।  এজন্য তা একমাত্র ম্যাসেজ বা অঙ্গমর্দন দ্বারাই পুনরায় চালু করা যেতে পারে। 
v     প্রয়োজনে  CPR(Cardio Pulmonary Resusciation)  ব্যবহার করুন।
v     যতদ্রুত সম্ভব অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্য নিতে হবে।

Post a Comment

1 Comments

Thanks you for your valuable comment.